August 2, 2025, 10:51 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৭ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ কার্যকর/ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দেশে প্রতি চারজনের একজন বহুমাত্রিক দরিদ্র, শিশুদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বছরে ১০-১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: মানুষের প্রকৃত আয় এখনো ঋণাত্মক হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স/১ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোরে মামলা গোপন তৎপরতার আশঙ্কা: ১১ দিনের ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে পুলিশ বিনিয়োগে স্থবিরতা, ভোগ কমেছে জুনে এলসি খোলা ৫ বছরে সর্বনিম্নে কুষ্টিয়ায় বিএনপি কর্মী হত্যা মামলায় সাবেক এসপি তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার, চলবে পূর্বের মামলা ধানের রেকর্ড উৎপাদন, আমদানিও প্রচুর তবু চালের দাম বেড়েছে ১১%-১৬%

সৎকারের অপেক্ষায় শ্মশানে স্বামীর লাশের পাশেই রাতভর অপেক্ষা স্ত্রী কল্পনা কর্মকারের !

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের হরিতলা এলাকার ৭০ বছর বয়সী প্রফুল্ল কর্মকার করোনা আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান শনিবার রাতে। সাথে ছিলেন স্ত্রী কল্পনা কর্মকার। তিনি মরদেহটি নিজ বাড়িরতে নিতে চাইলেও বাড়ি থেকে না করে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে প্রফুল্লের বড় ছেলে আনন্দ কুমার কর্মকার জানান তারা দুই ভাই, তাদের স্ত্রী ও তার চেরেও করোনায় আক্রান্ত। তাছাড়া, করোনায় মৃত কারো লাশ পাড়ায় এরে কোন প্রতিক্রিয়া হয় কিনা এই ভেবে তারা লাশটি সরাসরি শ্মমানে নিয়ে যেতে বলা হয়।
কিন্তু তারা করোনা আক্রান্ত বিধায় তারাও যেতে পারেননি শ্মশানে।
ঐ রাতেই মরদেহ এ্যাম্বুলেন্স যোগে নেয়া হয় মিরপুর উপজেলার পৌর শ্মশানে। অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ যখন শ্মশানে পৌঁছায় তখন মধ্যরাত। শ্মশান প্রাঙ্গণে কেউ ছিলেন না। শ্মশান গেট তালাবদ্ধ। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল।
প্রফুল্ল মারা যাবার পর স্ত্রী কল্পনা তার পরিবারকে জানান। কিন্তু দুই ছেলে, ছেলে বউ ও নাতিও করোনায় আক্রান্ত। নিকট আত্মীয়স্বজন তেমন কেউ নেই। রাতেই ছেলে আত্মীয়দের কাউকে জানাতে পারেন। জানান শ্মশান কমিটির সদস্যদেরও। কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি।
অ্যাম্বুলেন্স ও দুজন কর্মচারী শ্মশানের এক পাশে মরদেহ নামিয়ে দিয়ে ফিরে যায়।
গভীর ঐ রাতে সবাই ফেরত গেলেও ফেরত যেতে পারেননি শুধু প্রফুল্লের স্ত্রী কল্পনা রানী কর্মকার। রাকে বৃষ্টি আরো জোরে শুরু হলে তিনি নিজেই মরদেহ সড়িয়ে শ্মশানের পাশেই গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় আশ্রয় নেন। সেখানেই একাই পার করেন পুরো রাত। সকাল অবধি অপেক্ষার পরও মরদেহ সৎকারে শ্মশান কমিটি বা নিজ আত্মীয়-স্বজনের কেউ আসে না।
মিরপুর পৌরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম জানান উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা তাকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে যান।
তিনি জানান প্রফুল্ল কর্মকারের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা করোনা আক্রান্ত। সে কারণে তার পরিবারের সদস্যরা মরদেহ সৎকার করতে আসতে পারেননি। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউও মরদেহটির সৎকার করার জন্য এগিয়ে আসেননি। পরে রবিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালে তিনি তাকেই সমাহিত করার ব্যবস্থা করতে বলেন।
পরে বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন মরদেহটি মুখাগ্নি করেই শ্মশানের পাশেই সমাহিত করেন। তারা হলেন স্থানীয় যুবক রজিব, সুমন খান, সলেমান,রাজিব,রুবেল।
মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান বিষয়টি জানার পরপরই তিনি পৌর মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে অবহিত করেন। তারা স্থানীয় লোকজনকে দিয়ে সমাহিত করার কাজটি সম্পন্ন করেছেন।
বড় ছেলে আনন্দ কর্মকার জানান তারা সবাই করোনা আক্রান্ত তাইজন্যে শ্মশানে যেতে পারেননি। তিনি জানান তার মা-ই রাতভর বাবার লাশের সাথে ছিলেন।
শ্মশান কমিটির সভাপতি আনন্দ কুমার দেবনাথ জানান রাতে মৃত প্রফুল্লের ছেলে আনন্দ তাকে ফোনে বিষয়টি জানান। কিন্তু যেহেতু মৃত ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত ছিলেন, তার স্ত্রীও আক্রান্ত তাই তাকে তিনি শ্মশানের গেটের চাবি দিয়ে দেন। এরপর কি হয়েছে তা তিনি জানেন না।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net